Ahle Hadis Media-আহলে হাদিস মিডিয়া

Dhaka, Bangladesh

আহলে হাদীসের আদর্শিক পরিচয়

শাব্দিক অর্থে ‘আহলে হাদীস’ বলতে বুঝায় হাদীসওয়ালা বা হাদীসের অনুসারী। এখানে ‘হাদীস’ বলতে ইসলামের পরিভাষাগত ‘হাদীস’ নয়। বরং রায়, বিদআত ও বাতিলের বিপরীতে ‘সুন্নাহ’ কেই বুঝান হয়েছে। কুরআন ও হাদীস বা রাসূলুল্লাহর (সঃ) জীবন পদ্ধতিকে সাধারণ অর্থে সুন্নাহ বলা হয়ে থাকে। তাই সঙ্গত কারণেই ‘আহলে হাদীস’ অর্থ হচ্ছে কুরআন হাদীসের অনুসারী। আর পারিভাষিক অর্থে আহলে হাদীস বলতে বুঝায়, যারা সর্বাবস্থায় কুরআন-হাদীস হতে সরাসরি অথবা তার ভিত্তিতে প্রদত্ত সমাধানকে সকল ক্ষেত্রে চূড়ান্ত মনে করে এবং নিঃর্শভাবে মেনে নেয়।
সাহাবী ও তাবেয়ীদের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য ছিল- তাঁরা সর্বক্ষেত্রে রায় ও কিয়াসের উপর কুরআন ও হাদীসকে অগ্রাধিকার দিতেন। এজন্য তাঁরা ‘আহলে সুন্নাহ’ ও ‘আহলে হাদীস’ উভয় নামেই পরিচিত হতেন। প্রখ্যাত তাবেয়ী মুহাম্মদ ইবনে সীরীন (মৃঃ ১১০ হিঃ) হাদীসের সনদ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘যদি দেখা যেত যে, বর্ণনাকারী ‘আহলে সুন্নাহ’ দলভূক্ত তাহলে তাঁদের বর্ণিত হাদীস গ্রহণ করা হত। কিন্তু ‘আহলে দিআত’ দলভূক্ত হলে তার বর্ণিত হাদীস গ্রহণ করা হত না। (মুসলিম: মুকাদ্দামা) এখানে সাহাবী ও তাবেয়ীদেরকেই ‘আহলে সুন্নাহ’ বলে ইঙ্গিত করা হয়েছে। অন্যদিকে তাদেরকে ‘আহলে হাদীস’ নামে ভূষিত করেছেন বিখ্যাত সাহাবী হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) (মৃঃ ৭৪ হিঃ)। তিনি মুসলিম তরুণদের দেখলে খুশী হয়ে ধন্যবাদ জানিয়ে বলতেন- তোমরাই আমাদের পরবর্তী বংশধর ও পরবর্তী আহলে হাদীস।
দুনিয়ার বুকে কুরআন-হাদীসের শাসন প্রতিষ্ঠা, দলবন্দীর নিরসনকল্পেই মূলতঃ আহলে হাদীস আন্দোলনের সৃষ্টি। জাতির পুনর্গঠন ও সংস্কারসহ বিচ্ছিন্ন মুসলিম সমাজকে এক ও অভিন্ন মহাজাতিতে পরিণত করার উদ্দেশ্যেই এই আন্দোলন তার সকল কার্য পরিচালনা করে থাকে।
যে সকল বৈশিষ্ট্যের কারণে আহলে হাদীসকে আহলে হাদীস বলা হয় তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে (ক) কুরআন হাদীসকে নিঃশর্তভাবে মেনে নেওয়া (খ) ঐ দুই বস্তুকে একজন খাঁটি মুসলমানের জন্য যথার্থ পথ প্রদর্শক মনে করা (গ) তাকলীদের বন্ধনকে অস্বীকার করা (ঘ) ধর্মের নামে মাযহাবী সংকীর্ণতার উধের্্ব থাকা এবং (ঙ) ইসলামী আইনের ক্ষেত্রে স্থান ও কালের দাবী পূরণে ইজতিহাদের পথ কিয়ামত পর্যন্ত খোলা থাকবে বলে বিশ্বাস করা। আর এসব কারণেই আহলে হাদীসগণ সর্বদা বিদআতী ও মুকালি্লদদের রোষানলে পড়েছেন। বিভিন্ন সময়ে তাঁরা নানাবিধ অপ্রাপ্য দুর্নামের ভাগী হয়েছেন। কেই কেউ তাঁদেরকে অনৈতিহাসিকভাবে অথবা নিন্দার্থে ওয়াহহাবী, যায়দী, শীআ প্রভৃতি নামে আখ্যায়িত করেছেন। কেউবা তাচ্ছিল্যবশতঃ তাঁদেরকে রাফাদানী, গয়ের মুকালি্লদ ইত্যাদি বলেছে। আবার কেউ কেউ তো আরো দশ কদম এগিয়ে তাঁদেরকে বেদীন বা লা-মাযহাবী এবং বিদআতী, জাহান্নামী ও প্রথম পথভ্রষ্ট দল হিসেবে আখ্যায়িত করে নিজের মনের বিষাদগার করেছে।
অথচ এটা তো সবারই জানা থাকার কথা যে, আহলে হাদীস দলটি নতুন কোন দল বা মাযহাব নয়। বরং এটা হচ্ছে ন্যায় প্রতিষ্ঠার আন্দোলন, যা সাহাবীদের যুগ থেকে শুরু হয়ে প্রতি যুগে যুগে অব্যাহত ছিল এবং আজও মুসলিম বিশ্বের প্রায় সর্বত্রই অব্যাহত আছে।

read more

আহলে হাদীসের আদর্শিক পরিচয়

শাব্দিক অর্থে ‘আহলে হাদীস’ বলতে বুঝায় হাদীসওয়ালা বা হাদীসের অনুসারী। এখানে ‘হাদীস’ বলতে ইসলামের পরিভাষাগত ‘হাদীস’ নয়। বরং রায়, বিদআত ও বাতিলের বিপরীতে ‘সুন্নাহ’ কেই বুঝান হয়েছে। কুরআন ও হাদীস বা রাসূলুল্লাহর (সঃ) জীবন পদ্ধতিকে সাধারণ অর্থে সুন্নাহ বলা হয়ে থাকে। তাই সঙ্গত কারণেই ‘আহলে হাদীস’ অর্থ হচ্ছে কুরআন হাদীসের অনুসারী। আর পারিভাষিক অর্থে আহলে হাদীস বলতে বুঝায়, যারা সর্বাবস্থায় কুরআন-হাদীস হতে সরাসরি অথবা তার ভিত্তিতে প্রদত্ত সমাধানকে সকল ক্ষেত্রে চূড়ান্ত মনে করে এবং নিঃর্শভাবে মেনে নেয়।
সাহাবী ও তাবেয়ীদের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য ছিল- তাঁরা সর্বক্ষেত্রে রায় ও কিয়াসের উপর কুরআন ও হাদীসকে অগ্রাধিকার দিতেন। এজন্য তাঁরা ‘আহলে সুন্নাহ’ ও ‘আহলে হাদীস’ উভয় নামেই পরিচিত হতেন। প্রখ্যাত তাবেয়ী মুহাম্মদ ইবনে সীরীন (মৃঃ ১১০ হিঃ) হাদীসের সনদ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘যদি দেখা যেত যে, বর্ণনাকারী ‘আহলে সুন্নাহ’ দলভূক্ত তাহলে তাঁদের বর্ণিত হাদীস গ্রহণ করা হত। কিন্তু ‘আহলে দিআত’ দলভূক্ত হলে তার বর্ণিত হাদীস গ্রহণ করা হত না। (মুসলিম: মুকাদ্দামা) এখানে সাহাবী ও তাবেয়ীদেরকেই ‘আহলে সুন্নাহ’ বলে ইঙ্গিত করা হয়েছে। অন্যদিকে তাদেরকে ‘আহলে হাদীস’ নামে ভূষিত করেছেন বিখ্যাত সাহাবী হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) (মৃঃ ৭৪ হিঃ)। তিনি মুসলিম তরুণদের দেখলে খুশী হয়ে ধন্যবাদ জানিয়ে বলতেন- তোমরাই আমাদের পরবর্তী বংশধর ও পরবর্তী আহলে হাদীস।
দুনিয়ার বুকে কুরআন-হাদীসের শাসন প্রতিষ্ঠা, দলবন্দীর নিরসনকল্পেই মূলতঃ আহলে হাদীস আন্দোলনের সৃষ্টি। জাতির পুনর্গঠন ও সংস্কারসহ বিচ্ছিন্ন মুসলিম সমাজকে এক ও অভিন্ন মহাজাতিতে পরিণত করার উদ্দেশ্যেই এই আন্দোলন তার সকল কার্য পরিচালনা করে থাকে।
যে সকল বৈশিষ্ট্যের কারণে আহলে হাদীসকে আহলে হাদীস বলা হয় তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে (ক) কুরআন হাদীসকে নিঃশর্তভাবে মেনে নেওয়া (খ) ঐ দুই বস্তুকে একজন খাঁটি মুসলমানের জন্য যথার্থ পথ প্রদর্শক মনে করা (গ) তাকলীদের বন্ধনকে অস্বীকার করা (ঘ) ধর্মের নামে মাযহাবী সংকীর্ণতার উধের্্ব থাকা এবং (ঙ) ইসলামী আইনের ক্ষেত্রে স্থান ও কালের দাবী পূরণে ইজতিহাদের পথ কিয়ামত পর্যন্ত খোলা থাকবে বলে বিশ্বাস করা। আর এসব কারণেই আহলে হাদীসগণ সর্বদা বিদআতী ও মুকালি্লদদের রোষানলে পড়েছেন। বিভিন্ন সময়ে তাঁরা নানাবিধ অপ্রাপ্য দুর্নামের ভাগী হয়েছেন। কেই কেউ তাঁদেরকে অনৈতিহাসিকভাবে অথবা নিন্দার্থে ওয়াহহাবী, যায়দী, শীআ প্রভৃতি নামে আখ্যায়িত করেছেন। কেউবা তাচ্ছিল্যবশতঃ তাঁদেরকে রাফাদানী, গয়ের মুকালি্লদ ইত্যাদি বলেছে। আবার কেউ কেউ তো আরো দশ কদম এগিয়ে তাঁদেরকে বেদীন বা লা-মাযহাবী এবং বিদআতী, জাহান্নামী ও প্রথম পথভ্রষ্ট দল হিসেবে আখ্যায়িত করে নিজের মনের বিষাদগার করেছে।
অথচ এটা তো সবারই জানা থাকার কথা যে, আহলে হাদীস দলটি নতুন কোন দল বা মাযহাব নয়। বরং এটা হচ্ছে ন্যায় প্রতিষ্ঠার আন্দোলন, যা সাহাবীদের যুগ থেকে শুরু হয়ে প্রতি যুগে যুগে অব্যাহত ছিল এবং আজও মুসলিম বিশ্বের প্রায় সর্বত্রই অব্যাহত আছে।

Translate this for me
Member since: 4 years

1 Followers

    Following 1